ঢাকা ০২:১১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ মে ২০২৪, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মনোনয়ন পাচ্ছেন না ঢাকার ৮ এমপি

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০১:৫৭:০৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ অগাস্ট ২০১৭
  • ২১০ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ রাজধানীতে নিরঙ্কুশ আধিপত্য ধরে রাখতে ঢাকার সবগুলো আসনে জয় চায় আওয়ামী লীগ। এসব আসনে কেন্দ্রীয় ও নগর রাজনীতিতে প্রভাবশালীরা প্রার্থী হতে চাচ্ছেন। অনেকে নিজের নির্বাচনী এলাকায় ভিড়তে না পেরেও প্রার্থী হতে চাচ্ছেন রাজধানীর আসনগুলোয়।

আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, রাজধানীর দক্ষিণে প্রভাবশালীদের বেছে নেয়া হবে। উত্তরে একটু পরিশীলিত প্রার্থী দেয়া হবে। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরবর্তী সময়ে দেশজুড়ে নাশকতা প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়েছে শুধু রাজধানী আওয়ামী লীগের দখলে থাকায়। এ কারণে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকার ২০টি আসন কিভাবে ধরে রাখা যায় তা নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ চলছে।

দশম নির্বাচনে ঢাকায় মহাজোট শরিকদের পাঁচটি আসনে ছাড় দিলেও আগামী একাদশ সংসদ নির্বাচনে দুই থেকে তিনটি আসনের বেশি ছাড় দেবে না আওয়ামী লীগ। এক্ষেত্রে কমপক্ষে ৮টি আসনের এমপি আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাবেন না বলে জানা গেছে। এসব আসনে ক্লিন ইমেজের নতুন মুখ আসতে পারে বলে জানা গেছে।

ঢাকা-১ (দোহার ও নবাবগঞ্জ) জাতীয় পার্টির সঙ্গে জোট না থাকলে এ আসনে প্রার্থী দেবে আওয়ামী লীগ। বর্তমান এমপি জাতীয় পার্টির নেতা সালমা ইসলাম। আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীর তালিকায় আছেন প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ও বেক্সিমকো গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান, দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবদুল মান্নান খান ও মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী স্মৃতি কণা।

ঢাকা-২ (কেরানীগঞ্জ-কামরাঙ্গীরচর) আসনে খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম এমপির আসনে মনোনয়ন পেতে নির্বাচনী মাঠে নেমেছেন কেরানীগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান ও থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহিন আহমেদ। এলাকায় ব্যাপক জনপ্রিয়তা নিয়ে তিনি মনোনয়ন লাভের ব্যাপারে আশাবাদী এবং কেরানীগঞ্জের মানুষও তাকে চায় বলে জানা গেছে।

ঢাকা-৩ (কেরানীগঞ্জ) আসনে একক প্রার্থী বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু। এখানে বিকল্প প্রার্থী নেই।

ঢাকা-৪ (শ্যামপুর-কদমতলী) আসনে বর্তমান এমপি জাতীয় পার্টির নেতা সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা। দলীয় একটি সূত্রে জানা গেছে, জাতীয় পার্টির বাবলা এ আসনে জোটের মনোনয়ন বঞ্চিত হতে পারেন। এই আসনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন দৌড়ে এগিয়ে আছেন সানজিদা খানম এমপি। শ্যামপুর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন ও আওয়ামী লীগ সভাপতির সাবেক ব্যক্তিগত সমন্বয়কারী ড. আওলাদ হোসেনও এ আসনে মনোনয়ন প্রার্থী।

ঢাকা-৫ (ডেমরা-যাত্রাবাড়ী) আসনের বর্তমান এমপি হাবিবুর রহমান মোল্লা। বয়সের ভারে ন্যুব্জ হওয়ায় একাদশ নির্বাচনে দল থেকে মনোনয়ন নাও পেতে পারেন তিনি। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানা যায়, এ আসনে মনোনয়ন দৌড়ে এগিয়ে আছেন বৃহত্তর ডেমরা থানা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমানে যাত্রাবাড়ী থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশীদ মুন্না। বর্তমান এমপিপুত্র ডেমরা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান সজলও এ আসনে মনোনয়নের জন্য কাজ করছেন।

ঢাকা-৬ (সূত্রাপুর-কোতোয়ালি) আসনে দলীয় প্রার্থী দিতে পারে আওয়ামী লীগ। বর্তমান এমপি জাতীয় পার্টির নেতা ফিরোজ রশিদ। এ আসনে নগর নেতাদের দৃষ্টি বেশি। এখানে প্রার্থী হতে পারেন ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ। এছাড়াও এ আসনে সম্ভাব্য প্রার্থীর তালিকায় আছেন মহানগরের সিনিয়র সহ-সভাপতি আবু আহমেদ মান্নাফি, সাংগঠনিক সম্পাদক হেদায়েতুল ইসলাম স্বপন, ওয়ারী থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি চৌধুরী আশিকুর রহমান লাভলু, সূত্রাপুর থানার সভাপতি হাজী মো. শাহিদ।

ঢাকা-৭ (লালবাগ-চকবাজার) আসনের বর্তমান এমপি হাজী মোহাম্মদ সেলিম। ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করেন তিনি। এখন আওয়ামী লীগের এমপি হিসেবে পরিচিত সেলিম। শারীরিক সমস্যাজনিত কারণে একাদশ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন থেকে বঞ্চিত হতে পারেন তিনি। এখানে মনোনয়ন দৌড়ে আছেন বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) সভাপতি মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, নগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মোহাম্মদ আকতার হোসেন, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি হুমায়ুন কবির।

ঢাকা-৮ (রমনা-মতিঝিল) আসনের বর্তমান এমপি বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বরিশালের কোনো একটি আসন থেকে নির্বাচন করতে পারেন। এ আসনে আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী অনেক নেতার দৃষ্টি। সম্ভাব্য প্রার্থী ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি ইসমাঈল চৌধুরী সম্রাট, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোল্লা আবু কাউসার, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা বাহালুল মজনুন চুন্নু, বাহাদুর বেপারি, আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, সাবেক কমিশনার কামাল চৌধুরী, মহানগর দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম আশরাফ তালুকদার।

ঢাকা-৯ (মুগদা-সবুজবাগ) আসনের বর্তমান এমপি সাবের হোসেন চৌধুরী। আগামী নির্বাচনে এ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী সাবেক ছাত্রনেতা গিয়াস উদ্দিন পলাশ, আনিসুর রহমান আনিস। নগর নেতা আলমগীর চৌধুরী ও আশরাফুজ্জামান ফরিদও আছেন আলোচনায়।

ঢাকা-১০ (ধানমণ্ডি) আসনের একক প্রার্থী ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস এমপি। নির্বাচনী এলাকায় সব ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন তিনি। এখানে আওয়ামী লীগ বিকল্প প্রার্থী বিবেচনা করছে না।

ঢাকা-১১ (বাড্ডা-ভাটারা) আসনের বর্তমান এমপি ও ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি একেএম রহমতউল্লাহ। আগামী জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে একক প্রার্থী তিনি। একাদশ সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নের ক্ষেত্রে তাকেই বিবেচনা করার সম্ভাবনা বেশি।

ঢাকা-১২ (তেজগাঁও) আসনে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী থাকলেও আগামী সংসদ নির্বাচনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা আসাদুজ্জামান খান কামাল এমপি দল থেকে মনোনয়ন পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। নির্বাচনী এলাকায় দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে তার।

ঢাকা-১৩ (মোহাম্মদপুর-আদাবর) আসনের বর্তমান এমপি আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবীর নানক।

ঢাকা-১৪ (মিরপুর-শাহআলী) বর্তমান এমপি আসলামুল হক আবারো মনোনয়ন পাবার দৌঁড়ে এগিয়ে রয়েছেন। তবে সংরক্ষিত আসনের এমপি ও ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী মহিলা যুবলীগের সভাপতি সাবিনা আকতার তুহিনও মনোনয়ন লাভের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন।

ঢাকা-১৫ (কাফরুল) আসনে আওয়ামী লীগের দ্বন্দ্ব রয়েছে প্রকট। বর্তমান এমপি কামাল আহমেদ মজুমদারের সঙ্গে এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চাইতে পারেন স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গাজী মেসবাউল হক সাচ্চু, যুবলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম জাহিদ।

ঢাকা-১৬ (পল্লবী-রূপনগর) আসনে একাদশ নির্বাচনে বর্তমান এমপি ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লার সঙ্গে সম্ভাব্য প্রার্থী মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক এসএ মান্নান কচি। গত নির্বাচনেও এস এম মান্নান কচি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে ২৬ হাজারেরও বেশি ভোট পেয়েছিলেন।

ঢাকা-১৭ (গুলশান-ক্যান্টনমেন্ট) আসনে বর্তমান এমপি বিএনএফের চেয়ারম্যান এসএম আবুল কালাম আজাদ। এবার এখানে প্রার্থী দেবে আওয়ামী লীগ। সে ক্ষেত্রে সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী ও দলটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কর্নেল (অব.) ফারুক খান এমপির নাম শোনা যাচ্ছে। ফারুক খান গোপালগঞ্জ-১ (মুকসুদপুর) থেকে নির্বাচন করে এমপি হয়েছেন কয়েকবার। এবার সেখানে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ রেহানার নির্বাচন করার গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। সে ক্ষেত্রে ঢাকার এ আসনে ফারুক খান প্রার্থী হতে পারেন। এছাড়া এ আসনে সম্ভাব্য প্রার্থী রয়েছেন ঢাকা উত্তর আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ ওয়াকিল উদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাদের খান।

ঢাকা-১৮ (উত্তরা) আসনে দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন এমপি পুনরায় মনোনয়ন পেতে পারেন। বার্ধক্যের কারণে সাহারা খাতুন মনোনয়ন বঞ্চিত হলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মনিকে এ আসনে মনোনয়ন দেয়া হতে পারে। দীপু মনি চাঁদপুর-৩ আসনের বর্তমান এমপি। এছাড়াও আসনটিতে সম্ভাব্য প্রার্থী রয়েছেন নগর নেতা হাবিব হাসান, নাজমি উদ্দীন, তোফাজ্জল হোসেন।

ঢাকা-১৯ (সাভার) আসনে বর্তমান এমপি এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চেয়ারম্যান ডা. এনামুর রহমান মনোনয়ন বঞ্চিত হতে পারেন। নতুন আলোচনায় রয়েছেন যুবলীগের কেন্দ্রীয় নেতা তুহিন, আওয়ামী লীগ নেতা রাজীব।

ঢাকা-২০ (ধামরাই) আসনেও পরিবর্তন আসতে পারে। এই আসনটির বর্তমান এমপি ধামরাই থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল মালেক। এই আসনটিতে সম্ভাব্য প্রার্থী ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ নেতা বেনজীর আহমেদ।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

মনোনয়ন পাচ্ছেন না ঢাকার ৮ এমপি

আপডেট টাইম : ০১:৫৭:০৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ অগাস্ট ২০১৭

হাওর বার্তা ডেস্কঃ রাজধানীতে নিরঙ্কুশ আধিপত্য ধরে রাখতে ঢাকার সবগুলো আসনে জয় চায় আওয়ামী লীগ। এসব আসনে কেন্দ্রীয় ও নগর রাজনীতিতে প্রভাবশালীরা প্রার্থী হতে চাচ্ছেন। অনেকে নিজের নির্বাচনী এলাকায় ভিড়তে না পেরেও প্রার্থী হতে চাচ্ছেন রাজধানীর আসনগুলোয়।

আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, রাজধানীর দক্ষিণে প্রভাবশালীদের বেছে নেয়া হবে। উত্তরে একটু পরিশীলিত প্রার্থী দেয়া হবে। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরবর্তী সময়ে দেশজুড়ে নাশকতা প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়েছে শুধু রাজধানী আওয়ামী লীগের দখলে থাকায়। এ কারণে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকার ২০টি আসন কিভাবে ধরে রাখা যায় তা নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ চলছে।

দশম নির্বাচনে ঢাকায় মহাজোট শরিকদের পাঁচটি আসনে ছাড় দিলেও আগামী একাদশ সংসদ নির্বাচনে দুই থেকে তিনটি আসনের বেশি ছাড় দেবে না আওয়ামী লীগ। এক্ষেত্রে কমপক্ষে ৮টি আসনের এমপি আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাবেন না বলে জানা গেছে। এসব আসনে ক্লিন ইমেজের নতুন মুখ আসতে পারে বলে জানা গেছে।

ঢাকা-১ (দোহার ও নবাবগঞ্জ) জাতীয় পার্টির সঙ্গে জোট না থাকলে এ আসনে প্রার্থী দেবে আওয়ামী লীগ। বর্তমান এমপি জাতীয় পার্টির নেতা সালমা ইসলাম। আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীর তালিকায় আছেন প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ও বেক্সিমকো গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান, দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবদুল মান্নান খান ও মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী স্মৃতি কণা।

ঢাকা-২ (কেরানীগঞ্জ-কামরাঙ্গীরচর) আসনে খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম এমপির আসনে মনোনয়ন পেতে নির্বাচনী মাঠে নেমেছেন কেরানীগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান ও থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহিন আহমেদ। এলাকায় ব্যাপক জনপ্রিয়তা নিয়ে তিনি মনোনয়ন লাভের ব্যাপারে আশাবাদী এবং কেরানীগঞ্জের মানুষও তাকে চায় বলে জানা গেছে।

ঢাকা-৩ (কেরানীগঞ্জ) আসনে একক প্রার্থী বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু। এখানে বিকল্প প্রার্থী নেই।

ঢাকা-৪ (শ্যামপুর-কদমতলী) আসনে বর্তমান এমপি জাতীয় পার্টির নেতা সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা। দলীয় একটি সূত্রে জানা গেছে, জাতীয় পার্টির বাবলা এ আসনে জোটের মনোনয়ন বঞ্চিত হতে পারেন। এই আসনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন দৌড়ে এগিয়ে আছেন সানজিদা খানম এমপি। শ্যামপুর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন ও আওয়ামী লীগ সভাপতির সাবেক ব্যক্তিগত সমন্বয়কারী ড. আওলাদ হোসেনও এ আসনে মনোনয়ন প্রার্থী।

ঢাকা-৫ (ডেমরা-যাত্রাবাড়ী) আসনের বর্তমান এমপি হাবিবুর রহমান মোল্লা। বয়সের ভারে ন্যুব্জ হওয়ায় একাদশ নির্বাচনে দল থেকে মনোনয়ন নাও পেতে পারেন তিনি। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানা যায়, এ আসনে মনোনয়ন দৌড়ে এগিয়ে আছেন বৃহত্তর ডেমরা থানা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমানে যাত্রাবাড়ী থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশীদ মুন্না। বর্তমান এমপিপুত্র ডেমরা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান সজলও এ আসনে মনোনয়নের জন্য কাজ করছেন।

ঢাকা-৬ (সূত্রাপুর-কোতোয়ালি) আসনে দলীয় প্রার্থী দিতে পারে আওয়ামী লীগ। বর্তমান এমপি জাতীয় পার্টির নেতা ফিরোজ রশিদ। এ আসনে নগর নেতাদের দৃষ্টি বেশি। এখানে প্রার্থী হতে পারেন ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ। এছাড়াও এ আসনে সম্ভাব্য প্রার্থীর তালিকায় আছেন মহানগরের সিনিয়র সহ-সভাপতি আবু আহমেদ মান্নাফি, সাংগঠনিক সম্পাদক হেদায়েতুল ইসলাম স্বপন, ওয়ারী থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি চৌধুরী আশিকুর রহমান লাভলু, সূত্রাপুর থানার সভাপতি হাজী মো. শাহিদ।

ঢাকা-৭ (লালবাগ-চকবাজার) আসনের বর্তমান এমপি হাজী মোহাম্মদ সেলিম। ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করেন তিনি। এখন আওয়ামী লীগের এমপি হিসেবে পরিচিত সেলিম। শারীরিক সমস্যাজনিত কারণে একাদশ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন থেকে বঞ্চিত হতে পারেন তিনি। এখানে মনোনয়ন দৌড়ে আছেন বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) সভাপতি মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, নগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মোহাম্মদ আকতার হোসেন, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি হুমায়ুন কবির।

ঢাকা-৮ (রমনা-মতিঝিল) আসনের বর্তমান এমপি বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বরিশালের কোনো একটি আসন থেকে নির্বাচন করতে পারেন। এ আসনে আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী অনেক নেতার দৃষ্টি। সম্ভাব্য প্রার্থী ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি ইসমাঈল চৌধুরী সম্রাট, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোল্লা আবু কাউসার, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা বাহালুল মজনুন চুন্নু, বাহাদুর বেপারি, আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, সাবেক কমিশনার কামাল চৌধুরী, মহানগর দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম আশরাফ তালুকদার।

ঢাকা-৯ (মুগদা-সবুজবাগ) আসনের বর্তমান এমপি সাবের হোসেন চৌধুরী। আগামী নির্বাচনে এ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী সাবেক ছাত্রনেতা গিয়াস উদ্দিন পলাশ, আনিসুর রহমান আনিস। নগর নেতা আলমগীর চৌধুরী ও আশরাফুজ্জামান ফরিদও আছেন আলোচনায়।

ঢাকা-১০ (ধানমণ্ডি) আসনের একক প্রার্থী ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস এমপি। নির্বাচনী এলাকায় সব ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন তিনি। এখানে আওয়ামী লীগ বিকল্প প্রার্থী বিবেচনা করছে না।

ঢাকা-১১ (বাড্ডা-ভাটারা) আসনের বর্তমান এমপি ও ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি একেএম রহমতউল্লাহ। আগামী জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে একক প্রার্থী তিনি। একাদশ সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নের ক্ষেত্রে তাকেই বিবেচনা করার সম্ভাবনা বেশি।

ঢাকা-১২ (তেজগাঁও) আসনে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী থাকলেও আগামী সংসদ নির্বাচনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা আসাদুজ্জামান খান কামাল এমপি দল থেকে মনোনয়ন পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। নির্বাচনী এলাকায় দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে তার।

ঢাকা-১৩ (মোহাম্মদপুর-আদাবর) আসনের বর্তমান এমপি আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবীর নানক।

ঢাকা-১৪ (মিরপুর-শাহআলী) বর্তমান এমপি আসলামুল হক আবারো মনোনয়ন পাবার দৌঁড়ে এগিয়ে রয়েছেন। তবে সংরক্ষিত আসনের এমপি ও ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী মহিলা যুবলীগের সভাপতি সাবিনা আকতার তুহিনও মনোনয়ন লাভের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন।

ঢাকা-১৫ (কাফরুল) আসনে আওয়ামী লীগের দ্বন্দ্ব রয়েছে প্রকট। বর্তমান এমপি কামাল আহমেদ মজুমদারের সঙ্গে এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চাইতে পারেন স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গাজী মেসবাউল হক সাচ্চু, যুবলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম জাহিদ।

ঢাকা-১৬ (পল্লবী-রূপনগর) আসনে একাদশ নির্বাচনে বর্তমান এমপি ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লার সঙ্গে সম্ভাব্য প্রার্থী মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক এসএ মান্নান কচি। গত নির্বাচনেও এস এম মান্নান কচি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে ২৬ হাজারেরও বেশি ভোট পেয়েছিলেন।

ঢাকা-১৭ (গুলশান-ক্যান্টনমেন্ট) আসনে বর্তমান এমপি বিএনএফের চেয়ারম্যান এসএম আবুল কালাম আজাদ। এবার এখানে প্রার্থী দেবে আওয়ামী লীগ। সে ক্ষেত্রে সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী ও দলটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কর্নেল (অব.) ফারুক খান এমপির নাম শোনা যাচ্ছে। ফারুক খান গোপালগঞ্জ-১ (মুকসুদপুর) থেকে নির্বাচন করে এমপি হয়েছেন কয়েকবার। এবার সেখানে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ রেহানার নির্বাচন করার গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। সে ক্ষেত্রে ঢাকার এ আসনে ফারুক খান প্রার্থী হতে পারেন। এছাড়া এ আসনে সম্ভাব্য প্রার্থী রয়েছেন ঢাকা উত্তর আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ ওয়াকিল উদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাদের খান।

ঢাকা-১৮ (উত্তরা) আসনে দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন এমপি পুনরায় মনোনয়ন পেতে পারেন। বার্ধক্যের কারণে সাহারা খাতুন মনোনয়ন বঞ্চিত হলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মনিকে এ আসনে মনোনয়ন দেয়া হতে পারে। দীপু মনি চাঁদপুর-৩ আসনের বর্তমান এমপি। এছাড়াও আসনটিতে সম্ভাব্য প্রার্থী রয়েছেন নগর নেতা হাবিব হাসান, নাজমি উদ্দীন, তোফাজ্জল হোসেন।

ঢাকা-১৯ (সাভার) আসনে বর্তমান এমপি এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চেয়ারম্যান ডা. এনামুর রহমান মনোনয়ন বঞ্চিত হতে পারেন। নতুন আলোচনায় রয়েছেন যুবলীগের কেন্দ্রীয় নেতা তুহিন, আওয়ামী লীগ নেতা রাজীব।

ঢাকা-২০ (ধামরাই) আসনেও পরিবর্তন আসতে পারে। এই আসনটির বর্তমান এমপি ধামরাই থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল মালেক। এই আসনটিতে সম্ভাব্য প্রার্থী ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ নেতা বেনজীর আহমেদ।